নিজস্ব প্রতিবেদন : সম্প্রতি” ইউরো বাংলা প্রেসক্লাব ফ্রান্স “এর উদ্যোগে “সাংবাদিকদের সুরক্ষার দাবীতে ৭ দফা প্রস্তাবনা ” শীর্ষক সেমিনার প্যারিসের এক অভিজাত হল রুমে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রেসক্লাব সভাপতি তাজ উদ্দিন এর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক নজমুল হক এর পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব,শাহ গ্রুপের চেয়ারম্যান সাত্তার আলী সুমন- শাহ আলম।
মূল প্রবন্ধ রচনা করেন ইউরো বাংলা প্রেসক্লাব এর কেন্দ্রীয় সভাপতি তাইজুল ফয়েজ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা অটো ইকুলের পরিচালক হোসেন সালাম রহমান,
মানবাধিকার নেতা সেলিম আহমদ, জবরুল ইসলাম, সাংবাদিকদের সুরক্ষা বিষয়ক প্যানেল আলোচক ছিলেন এটিএন বাংলা’র ফ্রান্স প্রতিনিধি দেবেশ বড়ুয়া, প্রবাসে বাংলা’র সম্পাদক অধ্যাপক অপু আলম,নিউজ টুয়েন্টিফোরের ফ্রান্স প্রতিনিধি ফেরদৌস করিম, আমাদের কথার সম্পাদক লুৎফুর রহমান বাবু, মতামত পত্রিকার সম্পাদক মারুফ চৌধুরী অমিত, ফ্রান্স বিডি নিউজ ২৪ এর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রনি, অনলাইন লেখক রনি হাসান।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিবিসি নিউজ ও চ্যানেল এস-এর ফ্রান্স প্রতিনিধি ইকবাল মোহাম্মদ জাফর, ফ্রান্স টি বি এন পত্রিকার সম্পাদক শাবুল আহমদ, মাই টিভি ফ্রান্স প্রতিনিধি বাদল পাল।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশন ফ্রান্সের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহেদ আহমদ, শিহাব উদ্দিন, সিরাজ উদ্দিন, তাওহীদ আহমদ সহ বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী উপস্থিত ছিলেন।
পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন আমিনুল ইসলাম, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন অর্থ সম্পাদক আহমদ লুবেদ,অতিথি বৃন্দকে ফুল দিয়ে বরণ করেন নুরুল আমিন, আবু বকর, জারিফ আহমদ,তারেক আহমেদ।
সভার শুরুতে স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে নিয়ে এই পর্যন্ত দেশের জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন এবং ঢাকার উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রতি দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়। এ ধরনের দুর্ঘটনা ভবিষ্যতের না ঘটার জন্য সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও পেশাগত অধিকার নিশ্চিত করতে ৭ দফা প্রস্তাবনা গুলো হচ্ছে ১. একটি স্বাধীন ও কার্যকর ‘সাংবাদিক সুরক্ষা আইন’ অবিলম্বে প্রণয়ন করতে হবে, যা তাদের নিরাপত্তা ও পেশাগত স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে।২. সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হুমকি, হামলা, নিপীড়ন বা হয়রানির ঘটনার তাৎক্ষণিক তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।৩. সাগর-রুনি সহ সকল সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।৪.সাংবাদিকদের রিপোর্টিংয়ে কোনো রাজনৈতিক বা সরকারি চাপ, নির্দেশ বা প্রভাব খাটানোর অপচেষ্টা বন্ধ করতে হবে।৫. সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলার তদন্তের পূর্বে কোনো গ্রেপ্তার না করার নিয়ম চালু করতে হবে।৬. শুধু রাজধানী বা শহরের নয়—মফস্বল ও প্রবাসী সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।
৭. সাংবাদিকদের বাকস্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করে এমন আইন করা যাবেনা।
প্রধান অতিথি সাত্তার আলীর সুমন বলেন আমরা চাই একটি মুক্ত, স্বচ্ছ ও সাহসী সাংবাদিকতা – যে সাংবাদিকতা সমাজ বদলায়, মানুষকে জাগায়।
দেশের ভেতরে ও বাইরে সাংবাদিকরা ক্রমাগত হুমকি, নির্যাতন, এমনকি হত্যার শিকার হচ্ছেন। এটি গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।
সাগর -রনির মতো একজন মেধাবী সাংবাদিকের নৃশংস হত্যাকাণ্ড আজও বিচারহীনতায় রয়ে গেছে, যা আমাদের বিবেককে নাড়িয়ে দেয়। আমরা চাই এই হত্যার দ্রুত ও স্বচ্ছ বিচার হোক।
এদিকে ২৬৬ জন সাংবাদিকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে মুক্তি প্রদান করা হোক। একই সঙ্গে চাই, সাংবাদিকদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলা হোক – যেখানে তারা নির্ভয়ে সত্যের পক্ষে কথা বলতে পারেন।
আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে, রাজনৈতিক কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাবমুক্তভাবে, সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করতে হবে।
অবিলম্বে সাগর রুনির হত্যার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি। পাশাপাশি রাষ্ট্র যেন সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।
পরিশেষে সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতা কামনা করি তারা যেন বাংলা ভাষাভাষী সাংবাদিকদের সুরক্ষা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।